রবিবার কোচিতে কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু এই ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ কে? তা জানা থাকলে অবাক হতে হয়—কারণ মাঠে থাকা কোনও ফুটবলার নয়, বরং কেরালার সমর্থকরা, যারা নিজেদের দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত। প্রায় ৪০ হাজার কেরালিয়ান সমর্থকের চাপে ইস্টবেঙ্গলের খেলোয়াড়দের কিছুটা হলেও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। এই পরিস্থিতি সম্পর্কে জানেন ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত, যিনি পুরো পয়েন্টের জন্য ঝাঁপাতে প্রস্তুত।
আইএসএলের এই মরসুম শুরু হয়েছে হতাশাজনকভাবে। বেঙ্গালুরু এফসির কাছে ০-১ গোলে হেরে কোচ কুয়াদ্রাত চাপের মুখে পড়েছেন। কিছু সময় ধরে দলের স্ট্র্যাটেজি এবং খেলোয়াড় নির্বাচনের সমালোচনা শুনে আসছেন। তবে কেরালার বিরুদ্ধে আনোয়ার আলির মতো একজন দক্ষ ডিফেন্ডারকে পাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন তিনি। এই চ্যালেঞ্জকে কিভাবে মোকাবিলা করবেন, সেই নিয়ে কুয়াদ্রাতের দৃঢ়তা ফুটে উঠেছে।
কোচ বলেছেন, “আমরা সবে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে চলেছি। প্রথম ম্যাচ হারলেও আমরা খারাপ খেলিনি। অনেক সুযোগ তৈরি করেছি এবং ফুটবলাররা চেষ্টা করেছে।” দলের মধ্যে এই আত্মবিশ্বাসই খুব গুরুত্বপূর্ণ। একদিকে, তিনি জানেন যে কেরালার বিরুদ্ধে খেলা কঠিন, কারণ তাদের সমর্থকরা মাঠে প্রবল উৎসাহ নিয়ে উপস্থিত থাকে। তাই ভালো খেলতে হবে জেতার জন্য।
অন্যদিকে, কেরালাও প্রথম ম্যাচে হার মেনে নিতে পারেনি। কেরালার কোচ মিখায়েল স্তাহরও নিজেদের সমর্থকদের উপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, “সমর্থকরা যে কোনও দলের শক্তি। আমরা সেই শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ৩ পয়েন্ট পেতে চাই।” কিন্তু এই ম্যাচে কেরালার সেরা বিদেশি আদ্রিয়ান লুনা খেলতে পারবে না। এমন পরিস্থিতিতে, কেরালার দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকস, জিকসন সিং, মহেশ সিং এবং প্রভসুখন গিলরা শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
কোচ কুয়াদ্রাতের কথা শুনে বোঝা যায়, তিনি আত্মবিশ্বাসী। শনিবার রাতে স্থানীয় মাঠে এক ঘণ্টার বেশি অনুশীলন করেছে লাল-হলুদ বাহিনী। পাসিং ও সেট-পিসের উপর কাজ করেছে। দলের মনোবল বাড়ানোর জন্য এই অনুশীলন সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ।
এখন দেখা যাক, ইস্টবেঙ্গল কেরালার মাঠে সমর্থকদের চাপ সামলে কীভাবে নিজেদের সেরাটা দিতে পারে। যেমন দিয়ামান্তাকস বলেছেন, “আমি কেরালার সমর্থকদের প্রশংসা করছি। তাদের সামনে খেলতে পারা সবসময়ই সম্মানের।” এই কথাগুলো ফুটবলের জাদু, যেখানে সমর্থক ও খেলোয়াড়ের সম্পর্কটা গভীর।
এখন প্রয়োজন সঠিক মনোভাব এবং চাপকে সামলে উঠা। এই ম্যাচের গুরুত্ব শুধু পয়েন্ট পাওয়ার জন্য নয়, বরং দলের আত্মবিশ্বাস এবং সমর্থকদের সমর্থন জেতার জন্যও। কোচ কুয়াদ্রাতের জন্য এটি একটি টার্নিং পয়েন্ট হতে পারে। সবার নজর থাকবে কেরালার মাঠে, যেখানে ফুটবল খেলার সঙ্গে সঙ্গে আবেগ ও সমর্থনের রসায়নও চলতে থাকবে।
এই ম্যাচে জয় পেলেই ইস্টবেঙ্গলকে নতুন করে আত্মবিশ্বাস জোগাবে, যা আসন্ন ম্যাচগুলোর জন্য দরকার। ফুটবল যে শুধু খেলাই নয়, তা এক আবেগের জার্নি, যেখানে প্রত্যেকটি গোল, প্রত্যেকটি জয়, এবং প্রত্যেকটি সমর্থকের উল্লাসের গুরুত্ব অপরিসীম। কোচের নেতৃত্বে এবার ফুটবল মাঠে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে, যেখানে জয় শুধু পরিসংখ্যানের বিষয় নয়, বরং সমর্থকদের হৃদয়ে স্থান করে নেওয়ার একটি সুযোগ।